সোমবার, ৭ আগস্ট, ২০১৭

শহীদ"বলা নিয়ে বিতর্ক ও বাস্তবতা

"শহীদ" বলা নিয়ে বিতর্ক ও বাস্তবতা:

শাহাদাৎ আল্লাহ প্রদত্ত অন্যতম শ্রেষ্ঠ নিয়ামত। এটি প্রাপ্তির তামান্না প্রত্যেক মুমিনের অন্তরেই থাকা উচিৎ। তবে সবার ভাগ্যে এটি জোটে না। এর জন্য চাই পাহাড় সম মজবুত ঈমান। যে ঈমান জালেমের রক্ত চক্ষুকে সামান্যও পরোয়া করে না। এ নিয়ামাতে সেই ধন্য হয়, যে আল্লাহর পথে হাসতে হাসতে জীবন দিতে সদা প্রস্তুত থাকে।

রাসূল সা, বলেছেন- যে ব্যক্তি আন্তরিক ভাবে শাহাদাতের তামান্না লালন করে, তাকে তা দেয়া হবে। যদি সে আঘাত প্রাপ্ত নাও হয়, (মুসলিম -৪৭৭৭)।

আর যে আল্লাহর রাস্তায় আঘাত প্রাপ্ত হয়ে নিহত হয়, সে তো নিশ্চিত শহীদ, (ইবনু মাজাহ- ২৮০৪)।  তাকে তো মৃত বলতে নিষেধ করা হয়েছে, (সূরা বাকারাহ- ১৫৪)।

শাহাদাৎ যেহেতু অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ বিষয়, তাই এ সম্মানে উম্মতে মুহাম্মাদী সা, এর বেশি সংখ্যক লোক যেন সম্মানীত হতে পারে, তাই রাসূল সা, আল্লাহর পথে নিহত ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও আরো অনেক কে শহীদ হিসেবে ঘোষণা করেছেন।

তিনি বলেছেন- ১. যে আল্লাহরর পথে নিহত হয় সে শহীদ, ২. যে পেটের পীড়ায়, ৩.মহামারিতে, ৪. পানিতে ডুবে, ৫. গর্ভাবস্হায়, ৬. আগুনে পুড়ে ও ৭. ক্ষয় রোগে মারা যায় সে শহীদ, (ইবনু মাজাহ- ২৮০৩,  ২৮০৪)।

আল্লাহর পথে নিহত ব্যক্তি শহীদ এটাতো কুরআনের বক্তব্য। 
কিন্তু ইদানিং কিছু ভাই বক্তৃতা- বিবৃতি দিয়ে বেড়াচ্ছেন-   রাষ্ট্র ব্যবস্থায় আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করার কারণে যাদেরকে হত্যা করা হয়েছে তাদেরকে শহীদ বলা যাবে না।

তারা বলতে চান- তারা যদি নির্দোষ হন, মাজলুম হয়ে মৃত্যুবরণ করার কারণে  তাদের শাহাদাতের জন্য দুআ করা যাবে। কিন্তু শহীদ বলা যাবে না।

আমার প্রশ্ন- দ্বীন কায়েমের জন্য মাজলুম হয়ে নিহত হওয়া, আর অন্যান্য পার্থিব বিষয় নিয়ে মাজলুম হয়ে নিহত হওয়া কি এক জিনিষ?

যদি দ্বীনি আন্দোলন করার কারণে হত্যা করা হয়, আর তাকেই যদি শহীদ বলা না যায়, তাহলে শহীদ কাকে বলা হবে?

উম্মু ওরাকাহ রা, রাসূল সা,এর নিকট বদর যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করার অনুমতি চেয়েছিলেন। রাসূল সা, বলছিলেন- স্বগৃহে অবস্হান কর, আল্লাহ তোমাকে শাহাদাৎ নসীব করবেন।
রাবী বলেন- এ জন্য তাকে শহীদ বলা হতো, (আবু দাউদ- ৫৯১)।

রাসূল সা, বলেছেন, যে আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়,  সে শহীদ, (ইবনু মাজাহ- ২৮০৪)।

অথচ,  কিছু ভাই শুধু শুধু অপ্রয়োজনীয় সন্দেহ তৈরী করছেন।

কাউকে শহীদ বলা, আর জান্নাতের সার্টিফিকেট দেয়া এক কথা নয়। আমরা তো তাদের কে জান্নাতের সার্টিফিকেট দিচ্ছি না।

আপাত দৃষ্টিতে দ্বীনের জন্য তাদের আত্ম ত্যাগের স্বীকৃতি সরূপ  উত্তম ধারণা পোষণ করে আমরা তাদেরকে  শহীদ বলছি। এভাবে আল্লাহর রাস্তায় নিহত ব্যক্তিেকে শহীদ বলার রেওয়াজ ইসলামের শুরু থেকেই চলে আসছে।

কিন্তু শহীদের প্রকৃত পুরস্কার নির্ভর করবে, তার নিয়্যাতের উপর। নিয়্যাতের গরমিলের কারণে আল্লাহর রাস্তায় নিহত ব্যক্তিকেও জাহান্নামে ফেলে দেয়া হবে, (মুসলিম-৪৭৭১)।

আমরা কারো নিয়্যাতের উপর হাত দিতে চাই না। যে লোকটিকে নিয়্যাত ভাল না থাকায় জাহান্নামে ফেলে দেয়া হবে, রাসূল সা, তার আলোচনা করতে গিয়ে- "উস্তুসহিদা" তথা তাকে শহীদ করা হয়েছে শব্দটি ব্যবহার করেছেন। (মুসলিম- ৪৭৭১)।

যে ব্যক্তিটি জাহান্নামি। শুধু আল্লাহর রাস্তায় নিহত হওয়ার কারণে, আপাত দৃষ্টিকোণ থেকে তাকেও রাসূল সা, শহীদ বলেছেন। আর যার নিয়্যাত ও কর্ম সম্পর্ক আপনি কিছুই জানেন না।  শুধু মাত্র আল্লাহর দ্বীনের কথা বলাতেই যাকে হত্যা করা হয়েছে এবং যারা তাকে হত্যা করেছে, তারাও জানে, আল্লাহর দ্বীন কায়েমের কথা বলাই তার একমাত্র অপরাধ। তারপরও আপনাদের শুধু সন্দেহ লাগে, ওদের শহীদ বলা যাবে কিনা।

কেন আপনাদের এত সন্দেহ? প্রতিহিংসা নয়তো?

বলবেন, গণতন্ত্ররের কারণে এরা শহীদ নয়!

গণতন্ত্রের প্রসঙ্গ তো নির্বাচন এলে। যারা শুধু কুরআনের দাওয়াত দিতে গিয়ে নিহত হয়েছে। তাদের ব্যাপারে কী বলবেন?

জালেম শাসকের বিরুদ্ধে হক কথা বলা শ্রেষ্ঠ জেহাদ। এ হাদীসটি কি শুনেন নি?

অন্যরা শহীদ হলো কি না, তা নিয়ে বক্তব্য তো ভালই দিচ্ছেন। কিন্তু জালেম শাসকদের বিরুদ্ধে আপনাদের কয়টি বক্তব্য ইউটিউবে আছে?

বরং আমরা দেখতে পাচ্ছি,  জালেমদের দোসরদের কে মঞ্চে মেহমান হিসেবে দাওয়াত দিচ্ছেন। আবার শ্লোগানও দিচ্ছেন!

আমরা আপনাদের দ্বীনি ভাই। শিরক ও বিদআতের বিরুদ্ধে আমরাও আপনাদের সহযোদ্ধা।

তাই আসুন অপ্রয়োজনীয় আলোচনা করে পারস্পরিক দূরত্ব তৈরী করা থেকে বিরত থাকি।

দ্বীনের বিধানের ব্যাপারে সতর্ক হওয়া ভাল, কিন্তু খুত খুতে হওয়া ভাল নয়।

বি, দ্র, সবাই কে শালীন ভাবে মন্তব্য করার জন্য অনুরোধ করছি।

এলিয়েন কি সত্যি আছে?

এলিয়েন আছে সচ্ছ প্রমান(আল কোরআনের আলোকে) এলিয়েন বা অন্য গ্রহের প্রানী আজ আল কোরআন ও হাদীস দিয়ে প্রমান   .করবো যে এলিয়েন বা অন্য গ্রহে প্রাণ ...