বৃহস্পতিবার, ১১ মে, ২০১৭

লাইলাতুল বরাত বা শবে বরাত ইসলামী শরিয়তে আছে কি"না

বর্তমানে ইসলামী শরিয়তে লাইলাতুল বরাত বা শবে বরাত হলো বড় একটি বিতর্কিত বিষয় কেউ বলেছে শবে বরাত আছে আবার কেউ বলেছেন শরিয়তে শবে বরাত বলতে কিছুই নাই.
আসলেই কি শরিয়তে শবে বরাত বলতে কিছুই নাই.যদি নাই থাকতো তাহলে এতো বিতর্ক কেনো.আসলেই শবে বরাত কি. আসুন সঠিকটা কি জেনে নেয়া যাক.
এক:-
শবে বরাত দুটি শব্দের সংমিশ্রণ শব ও বরাত. শব অর্থ দিন আর বরাত অর্থ ভাগ্য. বে বরাত অর্থ ভাগ্য রজনী.
শবে বরাত শব্দটি"আল কোরআন ও হাদীসে কোথাও পাওয়া যায়নি.আল কোরআন ও হাদীসে ভাগ্য রজনী হিসাবে যা পাওয়া যায় তা হলো লাইলাতুল কদর.
তাহলে বরাত শব্দটি আসলো কোথায় হতে.

দেখা যাক বরাত কি ও কোথায় হতে আসলো.
বরাত শব্দটি একটি প্রচলিত পরিভাষা যা আবিষ্কার হয়েছে রাসূল (সঃ) এর ওফাতের প্রায় পাঁচশত বৎসর পর. সাহাবী" তাবেয়ীন"তাবে তাবেয়ীন"ও চার ঈমামদের আমলেও বরাত নামক কোন শব্দ পাওয়া যায়নি.
বরাত শব্দটি একটি ফারসি পরিভাষা. এটা কোন ছুন্নাতের পরিভাষা নয়.
যেমন. নামাজ"রোজা"পীর"শবে বরাত এইগুলি কোন ছুন্নাতের পরিভাষা নয় এই শব্দগুলো আল কোরআন ও হাদিসের কোনো যায়গায় নেই. এইগুলি বলায় কোন পাপ নেই ও সাওয়াব ও নেই এইগুলি হলো আঞ্চলিক পরিভাষা . 
যা আছে তা হলো ছুন্নাতের পরিভাষা যেমন.সালাত"সিমায়"সহবত"ও লাইলাতুল নেসফেবি সাবান.
আল কোরআন ও হাদিসে কোথাও বরাত শব্দ নেই কিন্তুু লাইলাতুুল নেসফে বি সাবান (বা সাবানের মধ্যরাত) উল্লেখ আছে.
সাবানের মধ্যরাতকে ফারসি পরিভাষায় বরাত বলে উল্লেখ করেছে.শবে বরাত বলাতে কোন ক্ষতি নেই.
তবে লাইলাতুল নেসফে বি সাবান বল্লে একটা ছুন্নাত আদায় হবে এবং সাওয়াব হবে.কারন এটা শরিয়তের পরিভাষা.

দুই:-
লাইলাতুল নেসফে বি সাবান( শবে বরাত) নিয়ে অনেকে হাদীস রয়েছে. তবে মুহাদ্দিসদের মতে বেশির ভাগ হাদিস হলো ঝাল ও বানোয়াট. এই নিয়ে দুইএকটি সহিহ হাদিস রয়েছে.
যেমন
রাসূল (সা.) বলেন, 'আল্লাহ তায়ালা মধ্য শাবান ( অর্থাৎ শবে বরাত) এর রাতে তাঁর সকল সৃষ্টির প্রতি (রহমতের) দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ (শিরক ও হিংসা)  পোষনকারী ব্যতীত সকলকে ক্ষমা করে দেন।'যদিও সে ঘুমিয়ে থাকে (সহীহ ইবনে হিব্বান ১২/৪৮১)
এই মর্মে দুইতিনটি হাদিস আছে. এবং এই হাদিসটিকে ইমাম বারী রাহঃ সহিহ বলেছেন.
এই হলো মহান আল্লাহ পাকের  সাধারণ ক্ষমা যা থেকে কেউ বঞ্চিত হবে না। তবে শর্ত দুটোঃ শির্কের সাথে সম্পৃক্ত থাকা যাবে না এবং কোনো মুসলিমের প্রতি বিদ্বেষ রাখা যাবে না।

তিন:-
এই রাতের কি বিশেষ কোনো আমল আছে কি"না.
রাসূল (সঃ) সাহাবা ও তাবেয়ীন কারোই এই রাত উজ্জাপন করে কোন আমল করেননি.
.সহীহ সনদে এই রাতের কোনো বিশেষ আমল নেই। সহিহ হাদিসে কোন আমল পাওয়া যায় না.তবে কেউ যদি অন্য দিনের মত আমল করে তাহলে কোন ক্ষতি নেই.
কিন্তুু সম্মেলিত ভাবে মসজিদে গিয়ে রবাতের নিয়তে নামাজ আদায় করা. দু'আ ও কবর যিয়ারত করা একেবারেই উচিৎ নয়.

মা'আরিফুল কুরআনের লেখক মুফতী শফী রহ. বলেন, রাসূল সা. যেহেতু জীবনে মাত্র একবার এই রাতে বাকী গোরস্তানে গিয়েছেন তাই আমাদেরও একবারের অধিক, প্রতিবছর গোরস্তানে যাওয়া উচিত নয়।
[ইবনু তাইমিয়াহ রাহ.সহ অনেক আলিম বলেছেন, এই রাতে ইবাদত হবে একাকী, সম্মিলিত নয়। সম্মিলিত ইবাদতের কথা কোনো হাদীসেই আসেনি। বরং এটি একটি বাজে প্রথা, যা বিদ'আতের পথ প্রশস্ত করে।]
//অত রাকাতে অতবার অমুক সূরা ইত্যাদি টাইপের যত স্পেইশাল নামায আছে তার সবই বাতিল, ভিত্তিহীন//

চার:-
রাসূল (সাঃ)শাবান মাসে খুব বেশি পরিমাণে সিয়াম (রোযা) রাখতেন সেহেতু এই মাসে সিয়াম রাখা যাবে যেকোনো দিন। আর প্রতি চন্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ সিয়াম রাখা তো সুন্নাত। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে সিয়াম রাখলে কোনো সমস্যা নেই.সাবান মাসের. ১ থেকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত সিয়াম পালন করতেন. তারপর আর সাবান মাসে সিয়াম পালন করতেন না.....

পাঁচ :-
বরাতের  এই রাত ভাগ্যরজনী নয় .ভাগ্যরজনী হলো, লাইলাতুল কদর। প্রয়োজনে দেখুনঃ সূরা আল কদরের তাফসীর, যেকোনো তাফসীরগ্রন্থ থেকে।
[শব্দটি মূলত "বরাত" না, "বারাআত"। বারাআত মানে মুক্তি। যেহেতু এই রাতে মুক্তির সুসংবাদ এসেছে তাই এই নাম]
লাইলাতুল নেসফে সাবান হলো মুক্তির রাত.দুইটি পাপ হতে দূরে থাকতে পারলে আল্লাহ পাক আপনার ও আমার সকল মুসলমানেদ ক্ষমা করে দিবেন.ইনশাআল্লাহ
এই রাতে কি হালুয়া-রুটি  কক্ষণো নয়। বরং এটি একটি নিকৃষ্ট প্রথা, যা আমাদের সমাজে চালু হয়েছে। তেমনি হৈ-হুল্লোড়, আতশবাজি ফুটানো, মাসজিদে জমায়েত হওয়া -- এগুলো খুবই বাজে প্রথা। যা কোনো হাদীসেই নেই।
এই রাতে গোসলের কোনো ফযিলত না, এটি একটি বাজে প্রথা। কেউ সুন্নাত মনে করে এই রাতে গোসল করলে সেটি হবে বিদ'আত. কারন এটা কোনো সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়.

সুতরাং আমরা প্রমান পাইযে বরাতের রাতে ইবাদত করা কোন সহিহ হাদীস দ্বারা প্রমানিত নয়.যা আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে তা সব ঝাল হাদিসের আমল.
তসহিহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয়. লাইলাতুল নেসফে বি সাবান বা (শবে বরাতের) রাত্রি  আছে.ঐ রাতে আল্লাহ পাক তাহার বান্দাদের ক্ষমা করেন.
(আল্লাহ পাক যেন আমাদের সবাইকে হেদায়েত ও ক্ষমা দান করেন আমিন)

এই লেখাটি বিভিন্ন আলেম ওলামাদের বক্তব্য হতে নেয়া.

কোন মন্তব্য নেই:

এলিয়েন কি সত্যি আছে?

এলিয়েন আছে সচ্ছ প্রমান(আল কোরআনের আলোকে) এলিয়েন বা অন্য গ্রহের প্রানী আজ আল কোরআন ও হাদীস দিয়ে প্রমান   .করবো যে এলিয়েন বা অন্য গ্রহে প্রাণ ...